বিটকয়েন কি

বিটকয়েন , মার্কিন ডলার বা জাপানি ইয়েনর মতো একটি মুদ্রা, কিন্তু বিটকয়েন কোন ব্যক্তির অন্তর্গত নয়, কেউ এর মালিক নয়। কোন সরকার/ ব্যাংক /কোম্পানী বা ব্যক্তির নিয়ন্ত্রিত নয়।
এটি একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, যা কেউ ডাউনলোড করে এবং ব্রাউজ করতে পারে ।
Satoshi Nakamoto নামের এক অজানা ব্যক্তি বিটকয়েন নেটওয়ার্ক ডিজাইন করেন এবং মূল রেফারেন্স বাস্তবায়ন করেন। অনেক দিন ধরে তাকে খোজা হয়েছে কিন্তু তার আসল পরিচয় পাওয়া যায় নি।
এখন বিটকয়েন নেটওয়ার্ক এর দাম ৫ বিলিয়ন ডলারের মত, যার এক সময় কোন মূল্যই ছিল না ।
বিটকয়েন নেটওয়ার্কে জয়েন করার সাথে সাথে ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে, ইউজারদের ২৫ ক্যারেক্টার লং পাবলিক এবং প্রাইভেট Key দিবে। এই কারণে বিটকয়েনকে crypt currencyও বলা হয়ে থাকে।
তো পাবলিক key টি হল অনেকটা আপনার ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার এর মত। এই পাবলিক Key টি আপনি সবাইকে দিতে পারবেন, যাতে তারা আপনাকে টাকা দিতে পারে। কিন্তু প্রাইভেট key টি নিরাপদে রাখতে হবে। আর কেউ যদি আপনার প্রাইভেট Key জানতে পারে, তাহলে আপনার সব ফান্ডে অ্যাক্সেস করতে পারবে। তাই এটি নিরাপদে রাখতে হবে।
যখন একজন বিটকয়েন ইউজার অন্য একজন বিটকয়েন ইউজারের কাছে টাকা পাঠায়, তখন বিটকয়েন নেটওয়ার্ক ট্রানজেকশন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে থাকে।
বিটকয়েন নেটওয়ার্কটি হল অনেক গুলো কম্পিউটার দ্বারা পরিচালিত, যা সমস্ত ট্রানজেকশনকে যাচাই করে, ভ্যালিড হিসাবে নিশ্চিত করে । এবং প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় মাইনিং।
আর যে কেউ তার কম্পিউটারে বিটকয়েন ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার ইন্সটল করে মাইনার হতে পারবে এবং নেটওয়ার্ক মেইন্টেইন করে টাকা ইনকাম করেতে পারবে।
কিন্তু মাইনার হওয়ার জন্য অনেক ভালো মানের কম্পিউটার থাকতে হবে এবং সেইসাথে গ্রেট কম্পিউটিং স্কিলও থাকতে হবে।
ভাল মানের GPU চিপ এবং ASIC কম্পিউটার ভাল হয় এই ধরনের কাজে।
যখন কেউ মাইনার হওয়ার জন্য বিটকয়েন ক্লায়েন্ট ইন্সটল করে তখন তার কম্পিউটারে অনেক ডেটা ডাউনলোড শুরু হয়, আর ডেটা গুলোকে বলা হয়ে থাকে blockchain।
blockchain হল বিটকয়েন নেটওয়ারর্কের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত ট্রানজেকশন হয়েছে তার বিশাল লিস্ট ।
প্রত্যেক ট্রানজেকশন একটি বান্ডেল হিসাবে থাকে, এবং এটাকে বলে block। আর একটি block যখন আরেকটি block এর সাথে টাইম অর্ডার অনুযায়ী চেইনভাবে থাকে, তখন বলা Blockchain.
যখন কোন ট্রানজেকশন হয় তখন মাইনাররা নেটওয়ারর্কে চেক করে দেখেন যে এই সেইম ট্রানজেকশনের কোন কপি আছে কিনা ? যদি না থাকে, তাহলে এই ট্রানজেকশনকে ভ্যালিড হিসাবে কাউন্ট হয় এবং blockchain এ যুক্ত হয়।
৫১% মাইনার এগ্রি করলেই যে কোন ট্রানজেকশন ভ্যালিড হিসাবে কাউন্ট হয়।
বিটকয়েন সিস্টেমে ট্রানজেকশনের হিসাব, ব্যাংকের মত কোন সেন্ট্রাল ডাটা সেন্টারে থাকে না, থাকে সকল মাইনারদের কম্পিউটারে ।
একদম decentralized। তাই কোন ব্যাড হ্যকার এত বড় নেটওয়ার্ককে শাটডাউন করতে পারবে না।
কোন হ্যকার যদি মনে করে যে,সে ফেইক বিটকয়েন ট্রানজেকশন তৈরি করবে। সে অনেক গুলো মাইনিং একাউন্ট ওপেন করে তার নিজের ফেইক ট্রানজেকশনকে ভ্যালিড হিসাবে ভোট দিবে । কিন্তু সে পারবে না । তার কারণ গুলো হল –
বিটকয়েনের সিকিউরিটি সিস্টেম যে কোন ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, ইনক্লুডিং sybil attack ।

সেইসাথে যে কোন ট্রানজেকশনকে ভ্যালিড হিসাবে ভোট দেওয়ার আগে প্রত্যেক মাইনারকেই তার কম্পিউটিং পাওয়ার ব্যবহার করে রেন্ডমলি জেনারেটেড ম্যাথম্যাটিক্যাল প্রবলেম সল্ভ করতে হয়।
আর অন্য মাইনাররা এই কাজ গুলো ভ্যারিফাই করে, যে ভোট দানকারী মাইনার আসলেই এই প্রবলেম গুলো সল্ভ করেছে কিনা।
মাইনারদের কোন ট্রানজেকশনকে ভ্যালিড হিসাবে ভোট দেওয়ার আগে প্রমাণ করতে হয় যে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ করেছে।
তার মানে কোন হ্যাকার যদি, তার ফেইক ট্রানজেকশনকে ভ্যালিড করতে চাই, তাহলে তার হিউজ পরিমাণ কম্পিউটিং পাওয়ার লাগবে, নেটওয়ার্কের ৫১% ।
ব্যাপারটা হল ১০০ টাকা চুরি করতে হলে ২০০ টাকার ইনভেস্ট করার মত।
বিটকয়েন নেটওয়ার্কের কম্পিউটিং পাওয়ার, ৫০০ লেটেস্ট সুপার কম্পিউটারের পাওয়ার থেকেও বেশী। তাই কারো পক্ষেই নেটওয়ার্ক হ্যাক করার জন্য এত বেশি কম্পিউটিং পাওয়ার অর্জন করা পসিবল না।
যত মাইনার জয়েন করে, বিটকয়েন নেটওয়ার্কের কম্পিউটিং পাওয়ার ততই বাড়ে ।

কারেন্টলি কোন ইন্টারন্যাশানাল ট্রানজেকশন সম্পূর্ণ হতে মিনিমাম ৫ টি Business Days লাগে। আর বিটকয়েনে টাকা খুব দ্রুত টারন্সফার করা যায়, বলতে গেলে ১০ থেকে ৫০ মিনিটের মত সময় লাগে।

Comments

Popular posts from this blog

পিৎজা এবং বই

How to Install R on Ubuntu